অনুবাদ: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া | সম্পাদনা: ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী
এ-কথা জানা প্রয়োজন যে, আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতির উপর সর্ব প্রথম যা ফরজ করেছেন তা হচ্ছে তাগুতের সাথে কুফরি এবং আল্লাহর উপর ঈমান। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “আর নিশ্চয়ই আমি প্রত্যেক জাতির কাছে রাসূল পাঠিয়েছি এ কথা বলে যে, তোমরা শুধু আল্লাহর উপাসনা কর এবং তাগুতকে পরিত্যাগ কর।” [সূরা আন্-নাহল: ৩৬]
তাগুতের সাথে কুফরির ধরণ হলো: আল্লাহ ছাড়া অন্য সবকিছুর উপাসনা (ইবাদত) বাতিল বলে বিশ্বাস করা, তা ত্যাগ করা, ঘৃণা ও অপছন্দ করা, এবং যারা তা করবে তাদের অস্বীকার করা, তাদের সাথে শত্রুতা পোষণ করা।
আর আল্লাহর উপর ঈমানের অর্থ হলো: আল্লাহ তা‘আলাই কেবলমাত্র হক উপাস্য ইলাহ, অন্য কেউ নয়— এ-কথা বিশ্বাস করা, আর সবরকম ইবাদতকে নিষ্ঠার সাথে আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট করা যাতে এর কোন অংশ অন্য কোন উপাস্যের জন্য নির্দিষ্ট না হয়; আর মুখলিস বা নিষ্ঠাবানদের ভালবাসা, তাদের মাঝে আনুগত্যের সম্পর্ক স্থাপন করা, মুশরিকদের ঘৃণা ও অপছন্দ করা, তাদের শত্রুতা করা।
আর এটাই ইবরাহীম আলাইহিস্সালাম এর প্রতিষ্ঠিত দীন বা মিল্লাত, যে ব্যক্তি তার থেকে বিমুখ হবে সে নিজ আত্মাকে বোকা বানাবে, আর এটাই হলো সে আদর্শ (أسوة) বা (Model) যার কথা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বাণীতে বলেছেন: “অবশ্যই তোমাদের জন্য রয়েছে ইবরাহীম ও তার সাথীদের মাঝে সুন্দর আদর্শ, যখন তারা তাদের জাতিকে বলেছিল: আমরা তোমাদের এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের অপরাপর উপাস্য দেবতাদের থেকে সম্পূর্ণ সম্পর্কমুক্ত, আমরা তোমাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলাম, আর আমাদের ও তোমাদের মাঝে চিরদিনের জন্য শত্রুতা ও ঘৃণার সম্পর্ক প্রকাশ হয়ে পড়ল, যে পর্যন্ত তোমরা শুধু এক আল্লাহর উপর ঈমান স্থাপন না করছ।” [সূরা আল-মুমতাহিনা: ৪]
আর এ তাগুত -এর সংখ্যা অত্যধিক; তবে প্রধান-প্রধান তাগুত হলো পাঁচটি :
এক: শয়তান: যে আল্লাহর ইবাদত থেকে মানুষকে অন্য কিছুর ইবাদতের দিকে আহবান করে। এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী: “হে আদম-সন্তান, আমি কি তোমাদের থেকে শয়তানের ইবাদত না করার অঙ্গিকার নিই নি? নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।” [সূরা ইয়াসিন: ৬০]
দুই: আল্লাহর আইন (হুকুম) পরিবর্তনকারী অত্যাচারী শাসক: এর প্রমাণ আল্লাহ তা‘আলার বাণী: “আপনি কি তাদের দেখেন নি যারা মনে করে আপনার কাছে এবং আপনার পূর্ববর্তীদের কাছে যা অবতীর্ণ হয়েছে তার উপর ঈমান এনেছে, তারা তাগুতকে বিচারক হিসাবে পেতে আকাঙ্ক্ষা করে অথচ তাদেরকে এর (তাগুতের) সাথে কুফরির নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। আর শয়তান তাদেরকে সহজ সরল পথ থেকে অনেক দুর নিয়ে যেতে চায়।” [সূরা আন্নিসা: ৬০]
তিন: আল্লাহ কর্তৃক অবতীর্ণ (আইনের) হুকুমের বিপরীত হুকুম প্রদানকারী: আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “আর যারা আল্লাহর অবতীর্ণ আইন অনুসারে বিচার করে না তারা কাফের।” [সূরা আল মায়েদা: ৪৪]
চার: আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন গায়েবের খবর রাখার দাবিদার: আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “তিনি গায়েবের জ্ঞানে জ্ঞানী, সুতরাং তার অদৃশ্য জ্ঞানকে কারও জন্য প্রকাশ করেন না, তবে যে রাসূল এর ব্যাপারে তিনি সন্তুষ্ট তিনি তাকে তার সম্মুখ ও পশ্চাৎ থেকে হিফাজত করেন।” [সূরা আল-জিন: ২৬, ২৭] অন্য আয়াতে বলেন: “আর তার কাছেই সমস্ত অদৃষ্ট বস্তুর চাবিকাঠি, এগুলো তিনি ছাড়া আর কেউ জানে না, তিনি জানেন যা ডাঙ্গায় আছে আর যা সমুদ্রে আছে। যে কোন (গাছের) পাতাই পতিত হয় তিনি তা জানেন, জমিনের অন্ধকারের কোন শস্য বা কোন শুষ্ক বা আর্দ্র বস্তু সবই এক প্রকাশ্য গ্রন্থে সন্নিবেশিত আছে।” [সূরা আল-আন‘আম: ৫৯]
পাঁচ: আল্লাহ ছাড়া যার ইবাদত করা হয় এবং সে এই ইবাদতে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট :আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “আর তাদের থেকে যে বলবে- আল্লাহ ব্যতীত আমি উপাস্য, তাকে আমি জাহান্নাম দ্বারা পরিণাম ফল প্রদান করব, এভাবেই আমি অত্যাচারীদের পরিণাম ফল প্রদান করে থাকি।” [সূরা আল-আন্বিয়া:২৯] মনে রাখা দরকার কোন মানুষ তাগুতের উপর কুফরি ছাড়া ইমানদার হতে পারেনা, আল্লাহ বলেন: “সুতরাং যে তাগুতের সাথে কুফরি করে এবং আল্লাহর উপর ঈমান আনে সে এমন মজবুত রজ্জুকে ধারণ করতে সক্ষম হয়েছে যার কোন বিভক্তি বা চিড় নেই, আর আল্লাহ সর্ব শ্রোতা ও সর্ব জ্ঞানী।” [সূরা আল-বাকারা: ২৫৬]
এ আয়াতের পূর্বাংশে আল্লাহ বলেছেন যে, “বিচার-বুদ্ধিসম্পন্ন পথ, ভ্রষ্ট-পথ থেকে স্পষ্ট হয়েছে”। ‘বিচার-বুদ্ধি সম্পন্ন পথ’ বলতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দীনকে, আর ‘ভ্রান্ত-পথ’ বলতে আবু জাহলের দীন, আর এর পরবর্তী আয়াতের ‘মজবুত রশি বা রজ্জু’ দ্বারা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (বা আল্লাহ ছাড়া হক কোন উপাস্য নেই) এ সাক্ষ্য প্রদানকে বুঝিয়েছেন। ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এ কলেমা কিছু জিনিসকে নিষেধ করে, এবং কিছু বস্তুকে সাব্যস্ত করে, সকল প্রকার ইবাদতকে আল্লাহর ছাড়া অন্যের জন্য হওয়া নিষেধ করে। শুধুমাত্র লা-শরীক আল্লাহর জন্য সকল প্রকার ইবাদতকে নির্দিষ্ট করে। “আল্লাহর জন্যই সমস্ত শোকর, যার নেয়ামত ও অনুগ্রহেই যাবতীয় ভাল কাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে।”
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]
Here is some word whice is not definate as” Ibadat” what is call Ibadat explain it make it clear whice
one is anty ibadte give us example
আস্সালামু আলাইকুম। খুব গুরুত্ব পূর্ণ জ্ঞান শেয়ার করেছেন।বড়ই আফসুস লাগে যখন দেখা যায় চারিদিকে মানুষ তাগুতকে মানছে আল্লাহকে ছেড়ে।
@’Rinquzaman:’আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নাই’ এর অর্থ হল জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহকে একমাত্র ইলাহ মানা অর্থা তার আদেশ ১০০% মান্য করা।হায় আফসুস! আজ মুসলমানরা দাবিকরে মুসলমান কিন্তু সরাসরি আল্লাহর আইনের বিরুধিতা করে।এটাই হল তাগুতের গোলামী করা।তাগুতকে নিজের ইলাহ বানিয়ে নেওয়া। আর আল্লাহ ও তার রাসুলে(স.)এর আদেশ মানার নামই হচ্ছে ইবাদত।আল্লাহ ও তার রাসুল(স) এর আদেশ অমান্য করার নামই হচ্ছে এন্টি-ইবাদত।
মনে হয় ওহাবীদের বই…
I want to share a link about “Taghut”:
I hope you like it.
May Allah give best reward to Quraner Alo.
সালামবাদ, চমতকার, খুব ভালো লাগলো। তাগুতের ব্যাপারে একটা সুন্দর প্রবন্ধ পড়ে এ বিষয়ে জ্ঞানার্জন করার সুযোগ হল। লেখক ও সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। দোয়া করছি আরো ভালো কোন বিষয়ে গবেষনা ধর্মী লেখার জন্য।
MD. REJWANE RONY
JAJAKALLAHKHAYER
Alhamdulallah.Allah apona k uttom protidan dan korun……ameen….. Islam Alam.
May Allah give you proper guidance and do not sit with misguided ones (bidati)
TAGUT MEANS ALLAH R OPOSITE ANY INTERESR.
তারা কি লক্ষ্য করে না, প্রতি বছর তারা দু’একবার বিপর্যস্ত হচ্ছে, অথচ, তারা এরপরও তওবা করে না কিংবা উপদেশ গ্রহণ করে না।
আত-তাওবা ১২৬
তারা কি লক্ষ্য করে না, প্রতি বছর তারা দু’একবার বিপর্যস্ত হচ্ছে, অথচ, তারা এরপরও তওবা করে না কিংবা উপদেশ গ্রহণ করে না।
আত-তাওবা ১২৬
হে আল্লাহ্ তুমি আমাকে সকল প্রকার তাগুত থেকে হেফাযত করো-আমিন।
জাযাকাল্লাহ