সংশ্ৰৰ [ উত্তম সঙ্গ গ্রহণ করুন ]

0
354

friend

লেখক: ড. খালিদ আবু শাদি | অনুবাদক: হাসান মাসরুর

১. আজকের আলোচ্য বিষয়ের ফায়দা

  • লাভ ও সফলতার পথ: আল্লাহ তাআলা বলেন:

সময়ের শপথ!” [সুরা আল-আসর, ১০৩ : ১]

অবশ্যই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত।” [সুরা আল-আসর, ১০৩ : ২]

তবে তারা নয়, যারা ইমান এনেছে, নেক কাজ করেছে, একে অপরকে সত্যের উপদেশ দিয়েছে এবং একে অপরকে ধৈর্যধারণের উপদেশ দিয়েছে।” [সুরা আল-আসর, ১০৩ : ৩] 

  • ইমানের স্বাদ আস্বাদন: রাসুল (সা:) বলেন: ‘যার মাঝে তিনটি জিনিস আছে, সে ইমানের স্বাদ পেয়েছে। তার কাছে অন্যান্য সকল জিনিস থেকে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল বেশি প্রিয়; সে শুধু আল্লাহর জন্যই মানুষকে ভালোবাসে এবং কুফরে নিক্ষিপ্ত হতে এমনই অপছন্দ করে, যেমন আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে অপছন্দ করে।‘ [সহিহুল বুখারি: ১৬, সহিহু মুসলিম: ৪৩]
  • রহমানের আরশের ছায়া অর্জনের সফলতা: রাসুল (সা:) বলেন: ‘নিশ্চয় কিয়ামতের দিন আল্লাহ বলবেন, “আমার মহত্ত্বের কারণে একে অপরের প্রতি ভালোবাসা স্থাপনকারীরা কোথায়? আজ আমি তাদেরকে আমার (আরশের) ছায়ায় ছায়া প্রদান করব—আজ এমন দিন, যেদিন আমার (আরশের) ছায়া ব্যতীত অন্য কোনো ছায়া নেই।‘ [সহিহু মুসলিম: ২৫৬৬]
  • ইবলিসকে বিতাড়িত করা: রাসুল (সা:) বলেন: ‘ছাগলের পালের মধ্য হতে নেকড়ে সেই ছাগলটিকে ধরে খায়, যে (পাল থেকে) দূরে দূরে থাকে।‘ [মুসতাদরাকুল হাকিম: ৭৬৫]
  • দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণের দিকে পথ-নির্দেশ করা: রাসুল (সা:) বলেন: ‘সৎ সঙ্গী ও অসৎ সঙ্গীর দৃষ্টান্ত হলো, কস্তুরিওয়ালা ও কামারের হাপরের ন্যায়। কস্তুরিওয়ালা হয়তো তোমাকে কিছু দান করবে কিংবা তার নিকট হতে তুমি কিছু খরিদ করবে কিংবা তার নিকট হতে তুমি সুবাস পাবে। আর কামারের হাপর হয়তো তোমার কাপড় পুড়িয়ে দেবে কিংবা তার নিকট হতে দুর্গন্ধ পাবে।‘ [সহিহু মুসলিম: ২৬২৮]

২. কুরআনের আলো

আল্লাহ তাআলা বলেন: “আপনি ধৈর্য সহকারে নিজেকে তাদের সাথেই রাখুন, যারা তাদের প্রভুর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সকাল-সন্ধ্যায় তাঁকে ডাকে। পার্থিব জীবনের চাকচিক্য কামনায় তাদের থেকে আপনার চোখ ফিরিয়ে নেবেন না । আর এমন লোকের আনুগত্য করবেন না, যার অন্তরকে আমি আমার স্মরণ থেকে অমনোযোগী করেছি, যে নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে এবং যার কাজই হলো বাড়াবাড়ি।” [সুরা আল-কাহফ, ১৮ : ২৮]

সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস (রা:) বলেন, ‘আয়াতটি আমাদের ছয়জনের ব্যাপারে নাজিল হয়েছে : ইবনে মাসউদ, সুহাইব, আম্মার, মিকদাদ, বিলাল ও আমার ব্যাপারে। কুরাইশরা বলল, “আমরা এদের অনুসরণ করতে পারি না । সুতরাং আপনি তাদেরকে নিজের কাছ থেকে বিতাড়িত করে দিন।” তখন এই আয়াতটি নাজিল হলো।’ ইবনে আব্বাস বলেন, নেতৃস্থানীয় কিছু মানুষ বলল, “আমরা আপনার প্রতি ইমান আনব, তবে আমরা যখন আপনার পেছনে সালাত আদায় করব, তখন এদেরকে আমাদের পেছনের কাতারে দেবেন। তারা আমাদের পেছনে সালাত আদায় করবে।” সুতরাং এখানে বিতাড়িত করার অর্থ হলো, সালাতে তাদেরকে পেছনে দাঁড় করানো; মজলিশ থেকে বের করে দেওয়া নয়।’

আয়াত থেকে কয়েকটি ফায়দা:

  • সৎ সংশ্রব ব্যতীত সংশোধিত হওয়া যায় না।
  • মন্দ ফলাফল সংক্রমিত হয়।
  • সৎ সংশ্রব সম্পদ বা মর্যাদার ভিত্তিতে নির্ণীত হয় না। বরং তা নির্ণীত হয় দ্বীন ও তাকওয়ার ভিত্তিতে ।
  • যে ব্যক্তি যে দলকে সমর্থন করবে, সে তাদের সাথে কিয়ামতের দিন উত্থিত হবে। কারণ, রাসুল (সা:) বলেন: যে ব্যক্তি যে কওমকে ভালোবাসবে, তার হাশর তাদের সাথেই হবে।‘ [মুসতাদরাকুল হাকিম : ৪২৯৪]

৩. রাসুল (সা:) আমাদের আদর্শ

রাসুল (সা:) মুআজ বিন জাবাল -কে বললেন: ‘হে মুআজ, আল্লাহর শপথ, আমি অবশ্যই তোমাকে ভালোবাসি। আল্লাহর শপথ, আমি অবশ্যই তোমাকে ভালোবাসি। হে মুআজ, আমি তোমাকে অসিয়ত করছি। তুমি প্রত্যেক সালাতের পর এই দুআটি কখনো পরিত্যাগ করবে না: ‘হে আল্লাহ, আপনার স্মরণে, আপনার শোকরে এবং আপনার উত্তম ইবাদতে আমাকে সাহায্য করুন।‘ [সুনানু আবি দাউদ: ১৫২২]

এই হাদিস থেকে শিক্ষণীয় বিষয়গুলো হলো:

  • আল্লাহর জন্য ভালোবাসার দাবি হলো, আল্লাহর জন্য নসিহত করা এবং আল্লাহর দিকে পথ-নির্দেশ করা।
  • আপনার সব বিষয় ঠিক হবে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনার মাধ্যমে : মূল উদ্দেশ্য হলো ইবাদত, আর এর মাধ্যম হলো সাহায্য। আর মাধ্যম ছাড়া কেউ মূল লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে না। এ কারণেই আমাদের রব তাঁর রাসুলকে বলেছেন: ‘তাঁর ইবাদত করো এবং তাঁর ওপর ভরসা করো।” [সুরা হুদ, ১১ : ১২৩]

আর এই ভরসাই হলো সাহায্য চাওয়া। নবিজি (সা:) আমাদের উপদেশ দিয়েছেন: তোমরা উপকারী বিষয়ে আগ্রহী হও এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও।’ [সহিহু মুসলিম: ২৬৬৪]

আমরা আজানের সময় যখন: ‘এসো সালাতের দিকে এবং ঔ ‘এসো সফলতার দিকে’ বলা হয়, তখন বলি, ‘আল্লাহর সাহায্য ছাড়া (কারও পক্ষে পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার) কোনো উপায় এবং (সৎকাজ করার) কোনো শক্তি নেই।’ ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বলি, ‘আমি আল্লাহর নামে (বের হলাম) এবং তাঁর ওপর ভরসা করলাম । আল্লাহর সাহায্য ছাড়া (কারও পক্ষে পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার) কোনো উপায় এবং (সৎকাজ করার) কোনো শক্তি নেই।’ এখানে ব্যবহৃত প্রতিটি বাক্যের মাধ্যমেই আল্লাহ তাআলার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা হয়েছে।

  • উত্তম ইবাদতই কাম্য; শুধু ইবাদত কাম্য নয়। তবে এই উত্তমতা হবে দুটি বিষয়ের মাধ্যমে: ইখলাস এবং আল্লাহর আদেশের অনুসরণ।
  • কথার পর কাজও করতে হবে। সুতরাং মানুষকে এই দুআ করার পর তাকে কাজের মাঠে নেক কাজ করতে হবে, যার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হবে।

৪. অমূল্য বাণী

  • আলকামা আল-আতারিদি মৃত্যুর সময় তার ছেলেকে অসিয়ত করে বলেন, ‘হে বৎস, যখন তোমার লোকদের সংশ্রব প্রয়োজন হবে, তখন এমন লোকদের সংশ্রব গ্রহণ করবে, যদি তুমি তার সেবা করো, তাহলে সে তোমাকে রক্ষা করবে; তুমি তার সংশ্রব গ্রহণ করলে তোমাকে সজ্জিত করবে। যখন তোমার খাদ্য সংকট দেখা দেবে, তখন সে তা জোগান দেবে। তুমি তার দিকে কল্যাণের হাত প্রসারিত করলে সেও তোমার দিকে কল্যাণের হাত প্রসারিত করবে। সে তোমার মাঝে কোনো কল্যাণ দেখলে, তা গুনে রাখবে। আর মন্দ কিছু দেখলে ঠিক করে দেবে।

এমন লোকের সংশ্রব গ্রহণ করো, যদি তুমি তার কাছে কিছু চাও, তাহলে সে তা প্রদান করবে। যদি তুমি নীরব হয়ে যাও, তাহলে সে তোমাকে অনুপ্রাণিত করবে; যদি তোমার ওপর কোনো দুর্যোগ নেমে আসে, তাহলে সে তোমাকে সান্ত্বনা দেবে। এমন লোকের সংশ্রব গ্রহণ করো, যদি তুমি কথা বলো, তাহলে সে তোমাকে সত্যায়ন করবে এবং যদি কোনো বিষয়ে দুজনে পরিবর্তন করতে চাও, তাহলে সে তোমাকে আমির বানিয়ে দেবে, আর যদি ঝগড়া করো, তাহলে সে তোমাকে অগ্রাধিকার দেবে।’

৫. একটি চমৎকার কাহিনি

ইয়ারমুকের যুদ্ধে হুজাইফা আল-আদাওয়ি তাঁর চাচাতো ভাইয়ের খোঁজ করছিলেন। তাঁর কাছে পানির একটি পেয়ালাও ছিল। তাঁকে আহত অবস্থায় পাওয়ার পর জিজ্ঞেস করলেন যে, ‘আমি কি তোমাকে পানি পান করাব?’ সে ইশারায় পান করানোর কথা বলল। পানি পান করানোর পূর্বমুহূর্তে তাঁরা জনৈক লোকের চিৎকার শুনল যে, ‘আহ! পানি।’ হুজাইফার চাচাতো ভাই লোকটির দিকে ইশারা করলেন, যেন পানির পেয়ালা নিয়ে তাঁর কাছে যাওয়া হয়। হুজাইফা তাঁর কাছে গেলেন । তিনি সেখানে গিয়ে হিশাম বিন আস-কে পেলেন। যখন তিনি তাঁকে পানি পান করানোর ইচ্ছা করলেন, ঠিক তখনই তাঁরা জনৈক লোকের চিৎকার শুনলেন, ‘আহ! পানি।’ হিশাম তাঁর দিকে ইশারা করে বললেন, যেন পানি নিয়ে তাঁর কাছে যাওয়া হয়।

হুজাইফা (রা:) পানি নিয়ে তাঁর কাছে ছুটে গেলেন। কিন্তু গিয়ে দেখলেন, লোকটি ইতিমধ্যেই দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। ফলে তিনি পানি নিয়ে হিশামের কাছে ফিরে এলেন; কিন্তু তাঁকেও মৃত পেলেন। এরপর নিজের চাচাতো ভাইয়ের কাছে ফিরে এসে তাকেও সেখানে মৃত অবস্থায় পেলেন। তাঁদের প্রত্যেকেই নিজের ওপর অন্যকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন। জীবনের অন্তিম মুহূর্তে এক পেয়ালা পানি পানে নিজের ওপর অন্যকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন।

৬. রমাদানে সংশ্রব

মন্দ লোকদের সংশ্রব থেকে বিদায় গ্রহণ করা এবং তাদের বন্দী থেকে মুক্ত হওয়ার সর্বোত্তম সময় হলো রমাদান। এ মাসেই সৎ লোকদের সংশ্রব গ্রহণ করা যায় এবং তাদের কাছে নিজেকে সঁপে দেওয়া যায়। আর কেন এমনটি হবে না? এটি তো সে মাস, যে মাসে শয়তানদেরকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয় এবং জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, আর জাহান্নামের দরজাগুলো বন্দ করে দেওয়া হয়। এটি সে মাস, যে মাসে নেককার লোকেরা আপনার সামনেই সকল কিছু থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিজেদেরকে মসজিদ ও কুরআন খতমে আবদ্ধ করে ফেলে। সুতরাং তাদের সাথে পরিচিত হোন এবং তাদের মাধ্যমে সান্ত্বনা লাভ করুন।

সৎসঙ্গ

  • সৎসঙ্গীর সাথে মিলে আপনি কুরআন শিক্ষা করবেন এবং তার সাথেই আল্লাহর কিতাবের দরসে উপস্থিত হবেন।
  • তার সাথে মিলে তারাবিহের সালাতে যাবেন এবং তাহাজ্জুদের সালাত পাঠ করবেন।
  • ইফতারের সময় তার সাথে মিলিত হবেন।
  • সে আপনাকে কল্যাণের ব্যাপারে অনুপ্রাণিত করবে এবং রমাদানের সময়গুলোকে গনিমত হিসেবে তুলে ধরবে।
  • মানুষ ও জিন শয়তানের ফাঁদে পড়া থেকে আপনাকে রক্ষা করবে।

৭. দুআ

  • হে আল্লাহ, আমাকে সৎসঙ্গ দান করুন। হে আল্লাহ, আমাদের এমন কিছু ভাই দান করুন, যাদেরকে আমরা আপনার জন্যই ভালোবাসব। হে আল্লাহ, তাদের সাথে আমাদেরকে জান্নাতুল ফিরদাওসে নবিজি -এর সঙ্গী হিসেবে কবুল করে নিন। হে আল্লাহ, আমাদের গুনাহের কারণে এই সংশ্রব থেকে আমাদেরকে বঞ্চিত করবেন না।
  • হে আল্লাহ, আমাদের জন্য সহজে এমন সৎসঙ্গী মিলিয়ে দিন, যে আমাদের স্মরণ করিয়ে দেবে, যখন আমরা ভুলে যাই এবং আমরা সৎকাজের ইচ্ছে করলে সাহায্য করবে।
  • হে আল্লাহ, স্থায়ী আবাসে আমি আপনার কাছে মন্দ দিন, মন্দ রাত, সময়, মন্দ সঙ্গী এবং মন্দ প্রতিবেশী থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

৮. নেককারদের সূর্য ডুবে গেছে

  • (বর্তমানের অবস্থা এমন যে) সৎ লোকও বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েছে, ফিতরাত নষ্ট হয়ে গেছে এবং সঠিক লোক পথ হারিয়ে ফেলেছে। কারণ, এক হাতে তালি বাজে না (অর্থাৎ কেউ সৎসঙ্গ ছাড়া সৎ থাকতে পারে না) এবং মন্দের আধিক্য সৎসাহস দুর্বল করে ফেলে।
  • যুবকরা ব্যাপকভাবে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়েছে। কেননা, তাদের সৎ পথে ধাবিত করার চেয়ে পথভ্রষ্ট করা হাজারগুণে সহজ। আর অধঃপতনের একটি মৌলিক কারণ হলো অসৎসঙ্গ।
  • বেহুদা কাজ ও কথার প্রসার ঘটেছে এবং সময়গুলো অনর্থক বিষয়ে নষ্ট হচ্ছে।
  • কল্যাণকর কাজের পরিবর্তে তুচ্ছ বিষয়ে প্রতিযোগিতা চলছে। মানুষ জান্নাতের দিকে ছুটে যাওয়ার পরিবর্তে প্রবৃত্তির দিকে ছুটে যাচ্ছে। তারা লাগাতার ভ্রমণ করছে, তবে তা জান্নাতের দিকে নয়; বরং জাহান্নামের গর্তের দিকে।
  • আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা, তাকওয়া ও নেক কাজে পরস্পরকে সাহায্যের চেয়ে ব্যক্তিগত ভালোবাসা ও ব্যক্তিস্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছে।

৯. যথেষ্ট কথা হয়েছে, এখন কাজ দেখার বিষয়

  • সঙ্গী নির্বাচন করা: কাউকে সঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করার পূর্বে আমরা তাকে যাচাই করে নেব। বন্ধুর মাঝে এ শর্তগুলো পরিপূর্ণ থাকতে হবে: বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান হওয়া, সঠিক দ্বীনের ধারক হওয়া, সাথে সাথে প্ৰশংসনীয় গুণাবলিও থাকা।
  • অন্যের দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি দূর করতে আমরা জান-মাল দিয়ে সাহায্য করতে ছুটে যাব। যদিও এর ফলে নিজের ওপর অন্যকে অগ্রাধিকার দিতে হয়। নবিজি (সা:) বলেন: ‘তোমাদের কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে নিজের ভাইয়ের জন্য তা পছন্দ করবে, যা সে নিজের জন্য পছন্দ করবে।’ [সহিহুল বুখারি: ১৩, সহিহু মুসলিম: ৪৫]
  • আমি আমার সঙ্গীকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসার বিষয়টি তাকে জানিয়ে দেবো; যেন আমাদের সম্পর্ক আরও মজবুত ও শক্তিশালী হয় এবং আমাদের ইখলাস হয় সুগভীর। রাসুল (সা:) বলেন: ‘যখন কোনো ব্যক্তি তার কোনো ভাইকে ভালোবাসে, তখন যেন সে তাকে জানিয়ে দেয় যে, সে তাকে ভালোবাসে।’ [সুনানু আবি দাউদ: ৫১২৪]
  • আমি বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির মাঝামাঝি ভারসাম্যপূর্ণ মহব্বত তৈরি করব। প্রশংসার ক্ষেত্রে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করব। উমর বিন খাত্তাব (রা:) বলেন, ‘তোমার ভালোবাসা যেন কঠিন আকার ধারণ না করে এবং তোমার ক্রোধ যেন অনর্থক না হয়

১০. স্বার্থপর হবেন না

  • যখন আল্লাহ তাআলা আপনাকে কোনো নেক সংশ্রব দান করবেন, তখন অন্যকেও সেদিকে দাওয়াত দেবেন। (সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়, যে নিজের জন্য যা পছন্দ করে, তা অন্য ভাইয়ের জন্য পছন্দ করে না। )
  • কথাগুলো আপনার মসজিদের মুসল্লি ও আপনার সহপাঠী-সহকর্মীদের মাঝে আলোচনা করুন।
  • এই বইটি নিজে পাঠ করে অন্যদেরকেও পড়তে দিন; যেন তারা এর থেকে উপকৃত হতে পারে।
  • মসজিদের ইমামকেও বইটি হাদিয়া দিতে পারেন; যেন তিনি জুমআর খুতবা বা তারাবিহ-পরবর্তী আলোচনায় এর থেকে ফায়দা গ্রহণ করতে পারেন।

উৎস: রমাদান-আত্মশুদ্ধির বিপ্লব, পৃষ্ঠা: ২২২ – ২৩২


'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্‌র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

দ্বীনী খিদমায় অংশ নিন

আপনার মন্তব্য লিখুন